একটি সম্পূর্ণ জীবন বৃত্তান্ত (CV) লেখার নিয়ম। (A টু Z গাইডলাইন)

11/29/2021 9:03:14 AM
jobdesk®
জীবন বৃত্তান্ত, বাংলা সিভি ফরমেট, বাংলা সিভি নমুনা,

 

জীবন বৃত্তান্ত হচ্ছে আপনার পেশাগত এবং শিক্ষা জীবনের বিস্তারিত ইতিহাস সম্বলিত নথি যা আপনি চাকরিদাতার নিকটে প্রেরন করে থাকেন । অল্প কথায়,  একটি জীবন বৃত্তান্ত বা CV হচ্ছে কোন প্রতিষ্ঠানে নিজেকে উপস্থাপনের মাধ্যম । তাই একটি উপযুক্ত এবং সম্পূর্ণ জীবন বৃত্তান্ত (CV) লেখার নিয়ম জানা অত্যাবশ্যক

ভাল ফলাফলের জন্য একটি জীবন বৃত্তান্ত তৈরির পূর্বে আপনাকে জীবন বৃত্তান্ত তৈরির উদ্দেশ্য ঠিক করে নিতে হবে । কারন, একজন নির্বাচক কিছু মুহূর্ত ব্যয় করবেন আপনার জীবন বৃত্তান্তটি মূল্যায়ন করতে । আর এই কিছু মুহর্তের ওপর নির্ভর করবে আপনার চাকরির সাক্ষাতকারের বিষয়টি। কারন, সত্যি বলতে একজন ‍নির্বাচকের নিকটে এতটুকু সময় থাকে না যে তিনি আপনার জীবন বৃত্তান্ত পুরোপুরি পড়বেন।

এছাড়াও  একজন নির্বাচকের দায়িত্ব থাকে যে, অল্প সময়ে সঠিক দক্ষতা, উপযুক্ত অভিজ্ঞতা এবং গুনাবলির পার্থীকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা। তাই সাক্ষাতকারে ডাক পেতে আপনার জীবনবৃত্তান্তটি হতে হবে উপযুক্ত । jobdesk ® এর মাধ্যমে আপনি অনলাইন CV বানাতে পারবেন ও জব এর জন্য এপলাই করতে পারবেন

 

একটি সম্পূর্ণ জীবন বৃত্তান্ত (CV) লেখার নিয়ম।

আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে একটি সম্পূর্ণ জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম নিম্নে উপস্থাপন করা হলো :

 

১. ব্যক্তিগত তথ্য-

আপনার জীবন বৃত্তান্তের শীর্ষে এই বিবরণগুলি রাখুন:

 

পুরো নাম

♦  মেইল ঠিকানা

ফোন নম্বার

বাসার ঠিকানা

   

২. ছবি-

জীবন বৃত্তান্তে ছবি সংযুক্ত করা বর্তমানে বাধ্যতামূলক । তাই অবশ্যই ছবি যুক্ত করবেন । ছবির বিষয়ে যেসব বিষয় লক্ষণীয়:

 

সাম্প্রতিক তোলা ছবি হতে হবে 

পরিপাটি চেহারা থাকতে হবে 

পরিধেয় পোশাক ফর্মাল হতে হবে 

চেহারা বোঝা যায় এমন ছবি হতে হবে

 

৩. ব্যক্তিগত বিবৃতি/ পেশাগত লক্ষ্য -

জীবন বৃত্তান্তের এ অংশে সংক্ষিপ্ত ও প্রাণবন্ত ভাবে আপনি আপনার ব্যক্তিগত বিবৃতি বা পেশাগত লক্ষ্য প্রকাশ করবেন। কঠিন শব্দের ব্যবহার না করে সহজ শব্দ ব্যবহার করুন, বাক্যগুলি সংক্ষিপ্ত এবং শ্রুতিমধুর করুন। এই অংশে আপনি আপনাকে ফুটিয়ে তুলুন। এমন কিছু লিখবেন না যা আপনাকে প্রকাশ করে না। 

 

৪. শিক্ষা- 

এ অংশে আপনি আপনার অর্জিত শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রদান করুন। সদ্য  অর্জিত সনদ প্রথমে এবং পর্যায়ক্রমে  অন্যান্য সনদ প্রদান করুন। সকল সনদের নিম্নোক্ত তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ :

 

কলেজ/ ইউনিভার্সিটির নাম 

ঠিকানা 

বিষয়/অনুষদ

পরীক্ষার সন 

গ্রেড পয়েন্ট/ ফলাফল 

 

৫.পেশাগত অভিজ্ঞতা-

একটি জীবন বৃত্তান্তের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ধরা হয় এই অংশটিকে। অনেক নির্বাচক এই অংশের ওপর ভিত্তি করে প্রার্থী নির্বাচন করে থাকেন। তাই প্রাসঙ্গিক পেশাগত অভিজ্ঞতা সংযুক্ত করুন। নিম্নোক্ত বিষয়গুলো অবশ্যই উল্লেখ করুন :

 

আপনার উপাধি

প্রতিষ্ঠানের নাম

চাকরির সময়কাল 

আপনার প্রধান দায়িত্ব সমূহ 

 

৬. একাডেমিক প্রকাশনা বা প্রকল্প/ স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ/ কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ-

সদ্য স্নাতকধারীদের অনেকেরই পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকে না।  যার ফলে পেশাগত অভিজ্ঞতার গুরুত্বপূর্ণ অংশটি ফাঁকাই রয়ে যায়।  একজন সদ্য প্রার্থী হিসেবে আপনি আপনার জীবন বৃত্তান্তটি ভারী করতে পারেন আপনার একাডেমিক প্রকাশনা বা প্রকল্পটি দিয়ে। একজন নতুন প্রার্থীকে আরো যাচাই করা হয় তার স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ, কর্মশালা ও প্রশিক্ষণনের  মাধ্যমে। তাই একজন নতুন প্রার্থী হিসেবে আপনি আপনার একাডেমিক প্রকাশনা বা প্রকল্প, স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ, কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ অবশ্যই উল্লেখ করুন । 

 

৭. ভাষাগত দক্ষতা-

বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে ভাষাগত দক্ষতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষার গুরুত্ব এবং চাহিদা অনেক  বেড়েছে। লক্ষ করলে দেখা যায়, বর্তমান সকল চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে ইংরেজি ভাষার জ্ঞান থাকা বাধ্যতামূলক হিসেবে চাওয়া হয়।  এছারাও অনন্যা ভাষায় দক্ষতা থাকলে তা আপনার জীবন বৃত্তান্তে সংযুক্ত করুন। কোনো ভাষার ওপর আপনার দক্ষতার বিপরীতে সনদ থাকলে তা উল্লেখ করতে ভুলবেন না। 

 

৮. কম্পিউটার ব্যবহারের দক্ষতা-

বর্তমানে চাকরির বাজারে আরো একটি বহুল চাহিদার বিষয় হচ্ছে কম্পিউটার ব্যবহারের দক্ষতা। ইংরেজি ভাষার মতো কম্পিউটার ব্যবহারের দক্ষতা একটি বাধ্যতামূলক বিষয় হয়ে গিয়েছে। কম্পিউটারের অনেক রকমের ব্যবহার  রয়েছে।  তাই কম্পিউটার ব্যবহারের কোন শাখায়  আপনার দক্ষতা কেমন তা বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করতে পারেন। কোনো ট্রেনিং গ্রহণ করে থাকলে বা সনদ অর্জন করে থাকলে আপনার জীবন বৃত্তান্ত তা উল্লেখ করুন। অবশ্যই তা আপনাকে অনন্যা প্রার্থী থেকে এগিয়ে রাখবে।

 

৯. রেফারেন্স-

রেফারেন্স অনেক ক্ষেত্রেই ভালো কাজ করে।  উদাহরণ স্বরূপ, আপনি কোনো স্বনামধন্য কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টরের রেফারেন্স আপনার সিভিতে যোগ করেছেন। ইন্টারভিউয়ের পর তাহার নিকট কল করলে, তিনি আপনার ব্যাপারে ভালো বললেন। যা অবশ্যই আপনার চাকরি পাওয়া সহজ করবে। 

 

ফ্রেশেরদের ক্ষেত্রে ইউনিভার্সিটির অধ্যক্ষ বা শিক্ষকদের রেফারেন্স নেয়া যেতে পারে। তবে সঠিক নাম, ঠিকানা এবং পরিচয় ব্যবহার  করা অত্যন্ত জরুরী কারণ অনেক ক্ষেত্রেই চাকরি নিশ্চিতের পূর্বে রেফারেন্সে প্রদত্ত  ব্যাক্তির সাথে যোগাযোগ করা হয়ে থাকে। 

 

১০. অঙ্গীকার নামা-

জীবন বৃত্তান্তে প্রদত্ত তথ্য অবশ্যই সঠিক এবং সত্য হতে হবে।  নিয়োগ দাতা আপনার প্রদত্ত তথ্য যাচাই করার অধিকার রাখেন। আপনার অঙ্গীকার করতে হবে যে, আপনার প্রদত্ত তথ্য সম্পূর্ণ সত্য এবং আপনার জানা মতে তা নির্ভুল। লেখার শেষে আপনার সাক্ষর এবং তারিখ প্রদান করতে হবে। 

 

এভাবে আপনি একটি মানসম্মত জীবন বৃত্তান্ত তৈরি করে ফেলতে পারেন। যা আপনাকে চাকরির বাজারে এগিয়ে রাখবে এবং jobdesk® আপনাকে দিবে সেই পথটি সহজ করে দিবে।